আফসিয়া জান্নাত সালেহ ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়মন গ্রুপ

অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করতে পারলে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নত রাষ্ট্র হবে : আফসিয়া জান্নাত সালেহ

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারায় যাঁরা নিজেদের মেধা ও প্রচেষ্টা দ্বারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন তাঁদেরই একজন আফসিয়া জান্নাত সালেহ। তিনি দেশের পর্যটন শিল্পখাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান Saimon Overseas Ltd-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর। একই সাথে তিনি সায়মন হলিডেজ এবং সায়মন লজিস্টিকস-এর প্রোপ্রাইটর ও সায়মন এয়ার ট্রাভেলস লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা সায়মন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আফসিয়া জান্নাত সালেহ বর্তমানে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সেক্রেটারি জেনারেল পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছরের মার্চ মাসে আটাবের নির্বাচনে তিনি সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি সংগঠনটির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

উদ্যমী এবং প্রাণবন্ত তারুণ্যে উজ্জীবিত আফসিয়া জান্নাত সালেহর ভাবনা-চিন্তার মধ্যে দেশের উন্নয়ন বিষয়টি সব সময়ই ক্রিয়াশীল। তিনি ভাবেন, পৃথিবীর অনেক দেশই তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পখাতে আয়ের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করেছে- সেক্ষেত্রে আমাদের দেশ কেন পিছিয়ে? এর আলোকেই তিনি সায়মন ওভারসীজকে সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। মেধাবী ও তারুণ্যদীপ্ত উদ্যোক্তা আফসিয়া জান্নাত সালেহ ২০০৯ সালে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে যোগদান করেন। তখনো তিনি অধ্যয়নরত। মেধাবী আফসিয়া জান্নাত ২০১২ সালে ফিন্যান্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে এক্সিকিউটিভ পদে যোগদানের সুযোগ পান। কিন্তু তিনি তাঁর পিতা এম. এ. মুহাইমিন সালেহ প্রতিষ্ঠিত সায়মন গ্রুপে যোগদান করেন। যদিও এটি ছিল তাঁর জন্যে চ্যালেঞ্জিং বিষয়। কেননা, অন্য কোম্পানিতে চাকরি মানে গৎবাঁধা কিছু কাজ- যেখানে মাস শেষে বেতন। কিন্তু নিজেদের প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব গ্রহণ মানে কোম্পানিকে উন্নত করা, ব্যবসায়িক সাফল্য নিশ্চিত করা।

আফসিয়া জান্নাত সালেহ প্রথমে কোম্পানির প্রশাসন ও ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টে যোগদান করেন এবং ধীরে ধীরে Saimon Overseas Ltd-এর বিভিন্ন দায়িত্বের সাথে সম্পৃক্ত হন। সায়মন ওভারসীজ দেশের ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট খাতের শীর্ষ কোম্পানির একটি- যেটি ১৯৮১ সাল থেকে ট্রাভেল ও পর্যটন খাতে সেবা প্রদান করছে। আফসিয়া জান্নাত সালেহ দেশের ট্রাভেল শিল্পের সফল নারী নেত্রী হিসেবে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। তিনি অনেকবারই এয়ারলাইন্স বিজনেস খাতে ‘টপ এজেন্ট অ্যাওয়ার্ডস’ অর্জন করেছেন। আফসিয়া জান্নাত সালেহ অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের জন্য সেক্রেটারি জেনারেল পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আটাবের সেক্রেটারি জেনারেল পদে নির্বাচিত প্রথম নারী। এর আগেও তিনি এ সংগঠনের প্রথম নারী সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে বেস্ট ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি অব দি ইয়ার নির্বাচিত হয় এবং অর্থকণ্ঠ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। আফসিয়া জান্নাত সায়মন হলিডে MICE WINS এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ব্যাপক সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। তিনি এখাতে নতুন নতুন ভেঞ্চার অর্জন করেছেন। এদেশের পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থার মধ্যেও তিনি গওঈঊ বিজনেসের ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছেন- এটি ব্যতিক্রম বলা যায়। আর এটি সম্ভব হচ্ছে তাঁর নিষ্ঠা, শ্রম ও আন্তরিকতার জন্যে। আফসিয়া নিজে যেমন উদ্যমী এবং কর্মপ্রিয় সেরকম সহকর্মীদেরকেও কাজে মনোনিবেশ করার মন্ত্র জানেন। এজন্যেই যে কোনো কাজে সাফল্য তাঁর হাতের মুঠোয় চলে আসে। তিনি যে কোনো কাজে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তিনি মনে করেন, নারীদের অধিক হারে শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য অঙ্গনে আসা উচিত। আফসিয়া বিশ্বাস করেন MICE তাদের উন্নয়নে আরো অধিক ভূমিকা রাখবে।

পর্যটন শিল্পের এই চৌকস ও মেধাবী নেত্রী মনে করেন বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় রাষ্ট্র, এ দেশের পর্যটন শিল্প খাত বিপুল সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশে এই সেক্টর অনেক পিছিয়ে আছে। এজন্যে সরকারের নীতিগত সাপোর্ট দরকার। পর্যটন শিল্পের জন্যে বাংলাদেশের পর্যটন সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
শিক্ষিত এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে পর্যটন খাতকে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তিনি নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব। আফসিয়া জান্নাত সালেহ বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রশ্নে মনে করেন, দেশ থেকে দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করতে পারলে বাংলাদেশ অতি দ্রুত উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে সক্ষম হবে। আফসিয়া জান্নাত সালেহ’র মতে, দেশকে আরও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। আত্মপ্রত্যয়ী, গতিশীল ও কর্মপ্রিয় আফসিয়া জান্নাত সালেহ দেশকে গভীরভাবে ভালোবাসেন। তিনি দেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বিশ্বে তুলে ধরার জন্যে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে অনুরোধ করেন; এতে করে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। দেশের পর্যটন শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটবে। অর্থকণ্ঠ প্রতিবেদক