চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে ব্যবসায়িক কৌশল বহুমুখী করতে হবে : মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল

ব্যবসা

মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল; সম্ভাবনাময় প্রতিশ্রুতিশীল এক শিল্পোদ্যোক্তার নাম। সততা, কর্মনিষ্ঠা ও কর্তব্য-পরায়ণতার কল্যাণে তিনি আজ দেশের একটি এসএমই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। কলেজ জীবন থেকেই ব্যবসায় হাতেখড়ি তাঁর। পিতা-মাতার অনুপ্রেরণা ও দোয়ায় শিক্ষা এবং কর্মজীবন একই সূত্রের সাফল্য। ব্যবসার পাশাপাশিই তাঁর শিক্ষার অগ্রসরতা। এমবিএ করেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। নিজ প্রতিষ্ঠান গড়ার আগে একটি প্রতিষ্ঠিত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির দায়িত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। সেটা প্রায় দুই দশক আগের কথা। তখন তিনি তারুণ্য-নির্ভর উদ্যম। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি পরিপূর্ণ যুবক। এম এইচ বাদল উদ্যোগী হয়ে গড়ে তুলেছেন ‘ইবনে হাইসম ল্যাবরেটরিজ লি.’ নামে ওষুধ শিল্পের একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সময়ের পথ ধরে এগিয়েছেন তিনি, এগিয়েছে তাঁর কর্মনিষ্ঠা এবং সাফল্য। তিনি বিশ্বাস করতেন— প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নিজ সম্পদ-নির্ভর শিল্প গড়ে তুলতে হবে। সেই বিশ্বাসেই তাঁর দীর্ঘ পথচলা। অর্থ ও বাণিজ্যের সেরা কাগজ ‘অর্থকণ্ঠ’ ম্যাগাজিন তাঁকে তরুণ উদ্যোক্তার মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্প্রতি ‘অর্থকন্ঠের’ মুখোমুখি হন মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল। কথা বলেছেন তারুণ্যের গণবিপ্লব ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে।

অর্থকণ্ঠ : গত ১৬ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা তথা শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে তারুণ্যের বিপ্লব। এই বিজয়কে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এম এইচ বাদল : প্রথম কথা হলো- নতুন প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। আসলে বিপ্লব যুগে যুগে একটি শক্তিশালী পরিবর্তনের বাহক হিসেবে কাজ করে। গণবিপ্লবের মাধ্যমে এই বিজয় শুধু একটি সরকারের পতন হিসেবেই নয়, বরং এটি একটি আধুনিক ও নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনার সূচনা করেছে বলা যায়। তরুণ প্রজন্মের এই সংগ্রাম, শিক্ষার্থী-জনতার এই অর্জন আগামীর বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলো। শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে সঠিক নেতৃত্ব, ঐক্য এবং সাহসিকতার মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। আমি ভরসা পাচ্ছি- এই বিজয়ীদের অর্জন এখন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে। তিনি সেটা সঠিকভাবে এবং সঠিক পথে পরিচালিত করবেন।
অর্থকণ্ঠ : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। এই অরাজনৈতিক সরকারের কাছে গণমানুষের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রত্যাশা কি হওয়া উচিত?
এম এইচ বাদল : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। দীর্ঘদিন নানাভাবে বঞ্চিত ছিলো মানুষ। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে গণমানুষের বঞ্চিত প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। তবে সরকারে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের জন্য গণমানুষের প্রত্যাশাপূরণ কিছুটা চ্যালেঞ্জিং বটে। এখানে তরুণ নেতৃত্বের পাশাপাশি অভিজ্ঞ ও সৎ দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের অভিজ্ঞ অভিভাবক শ্রেণী গড়ে উঠেছে; যা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহজ হবে। আমি আশাবাদী, এই সরকার দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি মানুষের নিরাপত্তা, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে সরকারকে। মনে রাখতে হবে, ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা হলো সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
অর্থকণ্ঠ : রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি দ্রুত নির্বাচন দিক সরকার, কিন্তু গণমানুষ চায় বর্তমান ধারার রাজনীতির অবসান। আপনার মতামত জানতে চাইছি।

এম এইচ বাদল : বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দ্রুত একটি নির্বাচিত সরকার অবশ্যই জরুরি। তবে বাংলাদেশে যে অস্থির রাজনৈতিক চর্চা চলছিল, সেই সংস্কৃতির যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে দ্রুত নির্বাচনও কোনো সমাধান নয়। জনমানুষের প্রত্যাশা- একটি স্থায়ী এবং সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ, যেখানে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং পরিবারতন্ত্রের কোনো অবস্থান থাকবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সে লক্ষ্যেই এগিয়ে চলা উচিত।
অর্থকণ্ঠ : দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, পরিবারতন্ত্র ও অপরাজনীতির ধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক অবকাঠামো দরকার, যার মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনীতির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এই জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কত দিন সময় দেয়া দরকার?
এম এইচ বাদল : রাজনীতির এই অপসংস্কৃতি দীর্ঘ দিনের। তাই একটি সঠিক অবকাঠামো পরিবর্তনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া কঠিন। অন্তর্বর্তী সরকারকে এমন একটি রূপরেখা তৈরি করতে হবে- যেটি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা উচিত। তবে এ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সরকারের যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। যেহেতু সরকারের প্রতিশ্রুতি ও সদিচ্ছা আছে তা সফল হবে আশা করা যায়।
অর্থকণ্ঠ : বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন এক প্রতিকূল বাস্তবতা। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে আপনার পরামর্শ বলবেন কি?
এম এইচ বাদল : সরকারকে কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে, যাতে অর্থনীতির সকল স্তরে প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রথমে উৎপাদনশীলতা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ আরও উন্মুক্ত ও প্রসারিত করা দরকার। রপ্তানি খাতের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি নতুন বাজারে প্রবেশের পথ খুলে দিতে হবে। এটা সম্ভব হলে দেশের অর্থনীতির এই প্রতিকূল অবস্থা ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। আর একটা বিষয় বলতে চাই- দেশের অর্থনীতি খাতকে দেখার দায়িত্ব দেশের সেরা দুই অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের হাতে। তাঁদের সহায়তায় রয়েছেন আরেক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আহসান এইচ মনসুর। তাঁদের মাথার উপর ছায়ার মতো রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁদের মাধ্যমে আমি অর্থনীতির নতুন স্বপ্ন দেখছি।
অর্থকণ্ঠ : একজন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কি কি প্রত্যাশা করেন?
এম এইচ বাদল : প্রথমে একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও প্রশাসনিক জটিলতা দূর করতে হবে। উদ্যোক্তা- ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদানের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিগত দিনের প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসন করতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আপনার ব্যবসাকে কীভাবে প্রভাবিত করছে? এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনি কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
এম এইচ বাদল : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের আয় বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে। বাজারের চাহিদা পূরণ ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য পণ্য ও সেবার বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টা করছি। সরকারি সহায়তা পেলে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি এবং দক্ষতা বৃদ্ধির উপর আরও জোর দেয়া যাবে।
অর্থকণ্ঠ : ক্রমবর্ধমান বিশ্বায়ন এবং বাজার স্যাচুরেশনের মুখে আপনার ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রতিযোগিতামূলক রাখার বিষয়টি আপনি কীভাবে নিশ্চিত করবেন?
এম এইচ বাদল : আসলে বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য মানের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। পাশাপাশি বাজারের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির উপর খেয়াল রেখে ব্যবসার কৌশল নির্ধারণ এবং নতুন পণ্য ও নতুন নতুন বাজারের সন্ধান করছি।
অর্থকণ্ঠ : আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো কি কি? কীভাবে সেগুলো মোকাবিলার পরিকল্পনা করছেন?
এম এইচ বাদল : প্রথমে দরকার অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা দূর করা। তারপর প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং পণ্য ও সেবার গুণগতমান বৃদ্ধি করা। পরিকল্পনা মাফিক ধাপে ধাপে এগোতে হবে। সময়ই বলে দিবে কখন কি করতে হবে। আসলে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় ব্যবসায়িক কৌশল বহুমুখী করতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি এবং সেসব আপনার ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে কীভাবে প্রভাবিত করে?
এম এইচ বাদল : বাস্তবতার নিরিখে বলতে হয়, বর্তমান ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। প্রথম থেকেই প্রশাসনিক জটিলতা এবং দীর্ঘায়িত প্রক্রিয়া ব্যবসার বিকাশে অন্তরায়। তাই প্রশাসনিক সংস্কার এবং প্রয়োজনীয় নীতি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এই সমস্যাগুলো দূর করতে হবে।
অর্থকণ্ঠ : বিগত সরকারের আমলে কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান ছিল। এখন সেগুলো কিভাবে পরিচালনা করা উচিত বলে মনে করেন?
এম এইচ বাদল : অতীতে দৃশ্যমান কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ হয়েছে যা বিশ্বে বাংলাদেশের আলাদা পরিচিতি বহন করছে। এই প্রকল্পগুলো দেশের আগামীর উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেগুলো সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করা জরুরি। এই প্রকল্পগুলো আগামীর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এক নতুন ধারা বহাল রাখবে। তাই সঠিক তদারকি এবং যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন করার মাধ্যমে মেগা প্রকল্পগুলো স্বচ্ছতার সাথে সফলভাবে পরিচালনা করা জরুরি। যে কোনো প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলোর গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে।

অর্থকণ্ঠ : আগামীর বাংলাদেশ কেমন দেখতে চান? এই ব্যাপারে আপনার কিছু সুনির্দিষ্ট পরামর্শ জানতে চাইছি।
এম এইচ বাদল : আগামীর বাংলাদেশ হওয়া উচিত বাধাহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশটিতে নানা ধর্মের, বর্ণের, নানা মত ও পথের মানুষের বাস। তাদের প্রত্যেকের রয়েছে অনুসারী-মতাদর্শী ও শুভার্থী। রয়েছে দেশের কল্যাণে নিজ নিজ অবদান। তাই সবাইকে সামনে রেখেই সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে হবে। আমরা সকলের মিলিত একটি উন্নত, সুশাসিত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক ন্যায়বিচার, আইনের শাসন, বৈষম্যহীন এবং অর্থনৈতিক সাম্য নিশ্চিত হবে। অর্থাৎ সকল ধরনের বৈষম্য দূর করতে হবে। মনে রাখতে হবে- তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে একটি দুর্নীতিমুক্ত ও মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ যে গণবিপ্লব করে দিয়েছে তা বারবার আসবে না। তাই এই বিজয়কে কাজে লাগিয়ে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই হোক সবার লক্ষ্য।
অর্থকণ্ঠ : ধন্যবাদ, আপনাকে। অর্থকণ্ঠকে আপনার মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ প্রদানের জন্য।
এম এইচ বাদল : অর্থকন্ঠকে ধন্যবাদ একটি সময়োপযোগী সংখ্যা প্রকাশ করার জন্য। আমি ম্যাগাজিনটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।